কোনো ঝামেলা ছাড়াই আপনি টবের মধ্যে আনারস চাষ করতে পারেন । আপনি আপনার বাড়ির বারান্দায় এমন কি ড্রইং রুমে আনারসের টবটাকে সোপিস হিসেবে বা ঘর সাজানোর বস্তু হিসেবে রাখতে পারেন ।
আনারস খেয়ে পাতাটা তো আমরা ফেলেই দেই, তাইনা? আপনি এই ফেলনা পাতা থেকেই নতুন আনারস গাছ পেতে পারেন । এমনকি সেই আনারস গাছে ধরবে নতুন আরেকটি আনারস!
তেমন কোনও যত্ন ছাড়াই আনারসের ফেলনা পাতা থেকে আনারস গাছ বোনা যায়। ফল ধরার পাশাপাশি ঘর সাজাতেও ব্যবহার করতে পারবেন আনারস গাছ। আসুন জেনে নেয়া যাক পদ্ধতিটি।
-প্রথমে একটি আনারসের থেকে ১ ইঞ্চি পরিমাণ আনারস সহ মাথার পাতা কেটে আলাদা করে রাখুন।
-এই কাটা অংশটি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। মাঝে মাঝে পানি বদলে দিন। সপ্তাহ দুয়েক পর দেখবেন কাটা অংশ থেকে শিকড়ের মত বের হয়েছে।
-এবার একটি টবে গোবর সার ও মাটি মিশিয়ে নিন।
-মাটিতে সামান্য গর্ত করুন।
-আনারসের পাতার সঙ্গে থাকা ফলটুকু ঢুকিয়ে মাটি দিয়ে ভালো করে ঢেকে দিন।
-এবার আর কোনও যত্ন না করলেও চলবে। আনারস গাছের জন্য তেমন কোনো খাটুনী করতে হয়না। দুই দিন -দিন পর পর টবে পানি দিলেই গাছ ভালো থাকবে।
– আনারস গাছ ধীর গতিতে বৃদ্ধি পায়। একটি আনারস গাছে ফল ধরতে প্রায় দেড় বছর লাগতে পারে ।
আজ ১ ভাদ্র রবিবার ১৪২২ বঙ্গাব্দ। প্রিয় ঋতু শরতের প্রথম দিন শুরু। আশ্বিনের শেষ দিনটি পর্যন্ত শরতের কাল । শিউলি মালা আর কাশ ফুলের দোলায় মন মাতানোর সময় বলে বিবেচিত ।
ষড়ঋতুর বাংলাদেশে প্রতিটি ঋতুই ভিন্ন ভিন্ন রূপবৈচিত্র্য নিয়ে হাজির হয়। শরতেও নতুন করে সাজে প্রকৃতি। গ্রামে যেমন, শহরেও তাই। এখন গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কাশফুলের দোলা আর শহরের নীল আকাশে ভেসে বেড়ায় সাদা মেঘের ভেলা। একটু খেয়াল করলে চোখে পড়বে।
আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরি খেলা রে ভাই, লুকোচুরি খেলা-
নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা রে ভাই লুকোচুরি খেলা…।
শরৎকালের মধ্যেই যেনো বাংলাদেশের হৃদয়ের স্পর্শ পাওয়া যায়। তাই শরৎ যখন চলে যায়, তখন আমাদের হৃদয় সম্পূর্ণ শূন্য করে দিয়ে চলে যায়। তার বিদায়ী পথে পড়ে থাকে অশ্রুসিক্ত শিউলি ফুলের মালা, এবং বিগত আনন্দের বর্ণ-বিলসিত অজস্র স্মৃতি। সাদা সাদা মেঘগুলো যেনো নীলাকাশে পেঁজা তুলোর ন্যায় ইতস্তত ঘুরে বেড়ায়।
নদীর তীরে তীরে কাশফুলের সাদা হাসির প্লাবন। মাঠে মাঠে সবুজের মেলা। মোট কথা, এতো সবুজ, এতো নীল আর এতো সাদার একত্র সমাবেশ, এমনটা অন্য কোনো ঋতুতে দেখা যায় না।
রূপসী বাংলার রূপ বিচিত্র, ঋতুচক্রে নানা বর্ণে-গন্ধে গানের সমারোহে নিত্য আবর্তিত হয়ে চলে।
সব মিলিয়ে একটু ভিন্নতরই হয় শরত। প্রতিবারের মতো এবারও নানা আয়োজনে প্রিয় ঋতুকে বরণ করে নেবে প্রকৃতিপ্রেমীরা । বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। এর মাধ্যমে চমৎকার ফুটিয়ে তোলা হবে শরতের রং রূপ।
প্রিয় ঋতুকে গানে কবিতায় নৃত্যের ছন্দে বরণ করে নেয়া হবে।
এই উপলক্ষ্যে উৎসব হবে । উৎসব হবে বাংলার ঋতুবৈচিত্র্য সম্পর্কে ধারণা দিতে ।
১৯ জুলাই, ২০১৫ বসেছিলাম আমার রুমের জানালার কাছে । বৃষ্টি হচ্ছিলো মুষলধারে ।
এই কয় দিন বৃষ্টি হচ্ছে । আমার নতুন নতুন অভিজ্ঞতাও হচ্ছে । আমি যে রুমটায় থাকি তার তিন দিকে জানালা আছে । বৃষ্টির ছবিগুলো তারই প্রতিচ্ছবি । এই লেখায় যতগুলো ছবি আছে তার সবগুলোই আমার কাছে বাস্তব হিসেবে ধরা দিয়েছিলো । তাই এসব ছবি শেয়ার করেছি । উপরন্তু বর্ষা ও শরৎকাল আমার প্রিয় দুই ঋতু ।
আমার রূমে ১৯ জুলাই, ২০১৫ দুপুরে একটা দোয়েল পাখি প্রবেশ করে । সামনের জানালায় ডানা জাপটাতে থাকে । আমি মোবাইলে এটার ভিডিও করলাম ও ইউটিউবে আপলোড করলাম ।
সামনা সামনি দোয়েল পাখি দেখার অভিজ্ঞতা হলো । আমি পাখিটাকে হাত দিয়ে ধরলাম ও ছেড়ে দিলাম । বাড়ির ছোটদের বিশেষত বোন ও ভাইদের ছেলে-মেয়েদের পাখিটা দেখার জন্য ঢেকে আনি নাই । কারণ তাদের ডেকে আনলে তারা পাখিটাকে খাচায় বন্দি করতো । আমি মুক্ত পাখিকে মুক্ত করে দিলাম । পাখিটা আরেকটা ভবনের দেয়ালের কাছে উড়ে যেয়ে বসে থাকলো প্রায় ২০ মিনিট আর আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো অনেক ক্ষণ । হয়ত পাখিটা আমাকে ধন্যবাদ দিচ্ছে ও আমাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে ।
দোয়েল পাখি একে বারে কাছ দিয়ে দেখা, হাত দিয়ে ধরা ও এর ভিডিও করার মুহুর্তটা আমার জীবনের অন্যতম স্মরনীয় মুহুর্ত । কারণ আমরা শহরের লোকরা জাতীয় পাখি দোয়েল একে বারেই কম দেখি আর তাদের বাসস্হান কেহ দেখেছে কি না সন্দেহ । এত পাখি থাকতে এটাকে কেন জাতীয় পাখি করা হলো তাও আমার কাছে বিস্ময়কর লাগে ।
সাদা শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল । গ্রামে এটাকে তরকারী হিসেবে খায় । অথচ এটার চেয়ে লাল শাপলা খুব সুন্দর ও এটা বাংলাদেশি প্রজাতি । কিন্তু লাল শাপলাকে জাতীয় ফুল করা হয়নি ।
আমরা ছাদে গরুকে পানি খাওয়ানোর চারির মধ্যে লাল শাপলা লাগিয়েছি । আশা করি এটাও আপনার ভাল লাগবে ।
আমার বৃষ্টি ভেজা ফুল – পাতা আর কর্দমাক্ত মাঠ ভাল লাগে । আপনাদেরও নিশ্চয়ই !!!
খালি চোখে গ্রামের আকাশ হতে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি, মাঝারি মানের ডিএসএলাআর ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবি আমি আমার দুরবীন দিয়ে খুব ভালভাবেই এন্ড্রমিডা গ্যালাক্সিকে দেখে থাকি । আমাদের মিল্কিওয়ের প্রতিবেশী গ্যালাক্সির নাম এন্ড্রমিডা । এটিতে মিল্কিওয়ের থেকে বেশী তারা থাকে । (১ লিখে ১২ টা শুন্য দিলে যে সংখ্যা হয় তার সম পরিমান সূর্যের মতো নক্ষত্র নিয়ে একটা গ্যালাক্সি গঠিত হয় । আমরা যে গ্যালাক্সিতে বাস করছি তার নাম মিল্কিওয়ে । ) এন্ড্রমিডা গ্যালাক্সির ছবি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি যা গ্রীক দেবী হেরা-র বুকের দুধ হতে সৃষ্টি হয়েছে । তার শিশু ছেলে দেবতা হারকিউলিস-কে দুধ খাওয়ানোর সময় তার দুধ আকাশে পড়ে যেয়ে এই গ্যালাক্সি সৃষ্টি হয়েছে । প্রাচীন গ্রীক পুরাণে এই কথাই লেখা আছে । আমার এই দুরবীন দিয়ে সবচেয়ে বেশী ভাল দেখা যায় আমাদের চাঁদ মামাকে । চাঁদ মামা হলেন উপগ্রহ । কারণ গ্রহের চার দিকে যেসব তারা ঘুরে তাদের উপগ্রহ বলা হয় । চাঁদ পৃথিবীর চার দিকে ঘুরে । জোছনা রাতে চাদের ছবি আল্লাহ চাদ সূর্য ও মহাকাশের বস্তুর ঘুরা সম্পর্কে সুরা ইয়াসীনের ৪০ নং আয়াতে বলেছেন : لَا الشَّمسُ يَنبَغى لَها أَن تُدرِكَ القَمَرَ وَلَا الَّيلُ سابِقُ النَّهارِ ۚ وَكُلٌّ فى فَلَكٍ يَسبَحونَ “ সূর্য নাগাল পেতে পারে না চাঁদের এবং রাত দিনের আগে হয় না । আকাশের সব কিছুই যারা যার কক্ষপথে সাঁতার কাটছে । “ চাঁদ মামাকে ইদানিং আমার ভাগ্নে- ভাগ্নি আর ভাইপো তাদের জন্য কেনা দুরবীন দিয়ে দেখে । তাদের বয়স খুবই কম । তারা কোথায় যেনো শুনেছে মানুষ মরে গেলে নাকি মানুষ আকাশের তারা হয়ে যায় আর মৃত মানুষরা নাকি পৃথিবীর লোকদের এভাবেই নাকি দেখে । আর কাজের বুয়ার কাছে শুনেছে,পৃথিবী একটা মহিষের শিংয়ের উপর আছে । পৃথিবী ঘুরতে ঘুরতে যখন এক শিং থেকে আরেক শিংয়ে যায়, তখন ভূমিকম্প হয় । আমার এক ভাই ভূতত্ববিদ । সে খুব সুন্দর ভাবে এসব বিষয় বুঝিয়ে বলে বুয়ার কথা ভুল । তারপরও তারা বলে মামা তোমার কথা ঠিক না । রুপকথার বইয়ের কথাগুলো আর বুয়ার কথাগুলো ঠিক । আমার তোলা চাদের কিছু অংশের ছবি আমি মনে করি, তারা যখন বড় হবে, তখন তারা নিজেরাই তাদের অনুসন্ধিৎসু মন দিয়ে সব বিচার করবে । আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা বিজ্ঞানমনস্ক ও অনিসন্ধিসু মন নিয়ে বেড়ে উঠুক । কারণ আল্লাহ সুরা ক্বাফের ৬ নং আয়াতে বলেছেন : أَفَلَم يَنظُروا إِلَى السَّماءِ فَوقَهُم كَيفَ بَنَينٰها وَزَيَّنّٰها وَما لَها مِن فُروجٍ “ তারা কি তাদের উপরস্থিত আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করে না আমি কীভাবে তা নির্মাণ করেছি এবং সুশোভিত করেছি ? তাতে কোন ছিদ্রও নেই। “ ( সুরা ক্বাফ : ৬ ) إِنّا أَرسَلنٰكَ بِالحَقِّ بَشيرًا وَنَذيرًا ۖ وَلا تُسـَٔلُ عَن أَصحٰبِ الجَحيمِ নিশ্চয় আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরূপে পাঠিয়েছি। আপনি দোযখবাসীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন না। ( সুরা বাকারা : ১১৯ ) চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ এবং সৌর জগতের পঞ্চম বৃহৎ উপগ্রহ। পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে চাঁদের কেন্দ্রের গড় দূরত্ব হচ্ছে ৩৮৪,৪০৩ কিলোমিটার (২৩৮,৮৫৭ মাইল) যা পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় ৩০ গুণ। চাঁদের ব্যাস ৩,৪৭৪ কিলোমিটার (২,১৫৯ মাইল) যা পৃথিবীর ব্যাসের এক-চতুর্থাংশের চেয়ে সামান্য বেশি। চাঁদের আয়তন পৃথিবীর আয়তনের ৫০ ভাগের ১ ভাগ। চাঁদই একমাত্র আকাশের বস্তু যাতে মানুষ ভ্রমণ করেছে । যার মাটিতে মানুষ হেঁটেছে । প্রথম যে বস্তুটি চাঁদের কাছ দিয়ে উড়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল তা হল রাশিয়ার লুনা ১ নামক আকাশ যান ।এই ঘটনা ১৯৫৯ সালে ঘটে ।তারপর ১৯৬৬ সালে বাশিয়ার লুনা ৯ নামক আকাশ যান প্রথমবারের মত চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে এবং লুনা ১০ আকাশ যান প্রথমবারের মত চাঁদের কক্ষপথ পরিক্রমণ করে। আমেরিকাও রাশিয়ার সাথে পাল্লা দিতে অ্যাপোলো প্রকল্প শুরু করে। আমেরিকা ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো-১১ আকাশ যান চাঁদের উদ্দেশ্যে পাঠায় । এর মাধ্যমে প্রথমবারের মত চাঁদে মানুষ অবতরণ করে । নীল আর্মস্ট্রং, বুজ আলড্রন এবং মাইকেল কলিংস্ অ্যাপোলো-১১ আকাশযানে করে চাঁদে যান । নীল আর্মস্ট্রং এবং বুজ আলড্রন ছিলেন প্রথম মানুষ যারা চাঁদে হেঁটছেন । চাদ হতে পৃথিবীর ছবি, পরে আরও ১০ জন লোক চাঁদে হেঁটেছেন । ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে ছয়টি আকাশযান চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে। অ্যাপোলো অভিযানের পর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা চাঁদে মানুষ পাঠানোর সকল পরিকল্পনা ত্যাগ করে। ২০০৯ সালে প্রথম দিকে ভারত, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগীতায় চন্দ্রযান নামে একটি আকাশযান চাঁদে পাঠায় । কিন্তু প্রকল্পটিতে সফল হতে ব্যর্থ হয়। মহাকাশযান চাঁদে পৌঁছার পর পরেই তার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিন্তু অল্প সময়ে যে তথ্য পাঠিয়েছে তা মানব জাতিকে নতুন করে আশার আলো দেখিয়েছে । কারণ চাঁদে পানির অস্তিত্ব পাওয়ার তথ্য এটি দিয়েছে । এর ফলে মানুষ চাঁদে যেয়ে বাস করার মতো পানি সংগ্রহ করতে পারবে । এই তথ্য মানুষকে চাঁদে বাস করার ক্ষেত্রে আশার আলো দেখিয়েছে । ( চলবে )প্রয়োজনীয় কিছু ভিডিও-র লিংক : মিল্কিওয়ের উপর ভিডিও যা দেখে আপনারা মিল্কিওয়ে সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন : https://www.youtube.com/watch?v=sm-ucbDVyRU ৬৫০ কোটি বছরের মধ্যে কীভাবে পৃথিবীর সব কিছু সৃষ্টি হলো বলা হয়েছে তা এই দুই মিনিটের ভিডিও দেখে ধারণা পাবেন : https://www.youtube.com/watch?v=NYbTNFN3NBo How big is the Universe? এই ভিডিও দেখে আমাদের মহাবিশ্বের বিশালতা সম্পর্কে ধারণা পাবেন : https://www.youtube.com/watch?v=JvdL3R7fDL4উপসংহার : আশা করি আপনাদের আমার বিজ্ঞান বিষয়ক এই নতুন ধারাবাহিক পোস্ট ভাল লাগবে । আমি মনে করি আমার এসব লেখা পড়ে আপনারা মহাবিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে বর্তমান সময়ের সব তথ্য জানতে পারবেনই, বরং কীভাবে মানুষ আকাশকে জয় করেছে এবং আকাশের বিভিন্ন গ্রহে বসবাস করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সে সম্পর্কে জানতে পারবেন । কৃতজ্ঞতা স্বীকার : কুরআনে জোতির্বিজ্ঞান : http://www.islam-guide.com/bqs/17astronomy.htm যেভাবে আমি আমার দুরবীনটাকে আকাশ দেখার জন্য প্রস্তুত করি : http://www.veengle.com/s/Seben%20Telescope.htmlhttp://www.martspics.com/Telescope%20Accessories.htm আমি আকাশ দেখার জন্য যে সংগঠণ পরিচালনা করতাম : Bangladesh Astronomical Union http://bangladesh-astronomical-union.blogspot.com মিল্কিওয়ের ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা http://en.wikipedia.org/wiki/Milky_Wayhttp://www.dailygalaxy.com/my_weblog/2009/03/mystery-of-the.htmlhttp://scienceline.org/2011/03/galaxies-get-hungry-too/ এন্ড্রোমিডা গ্রালাক্সির ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা : http://www.wikihow.com/Find-the-Andromeda-Galaxy চাদের ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা : http://www.stargazing.net/david/moon/moonrise20050917.html চাদ হতে পৃথিবীর ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা : http://www.jaxa.jp/press/2008/10/20081009_kaguya_e.html Girl Scout Ayah Syeed, 10, peers at the stars through George Mason University http://articles.washingtonpost.com/2012-02-29/local/35443184_1_telescope-observatory-astronomy-students
অনেক দিন আগে একটা দুরবীন সংগ্রহ করেছিলাম । দুরবীনের প্রসঙ্গ আসলে জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিষশাস্ত্র – এর প্রসঙ্গ আছে । এদুটার মধ্যে পার্থক্য আছে ।
জ্যোতির্বিজ্ঞান হলো আকাশের গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে জানার বিজ্ঞান। গ্রহ নক্ষত্রে রকেটে করে যাওয়াই হলো জ্যোতির্বিজ্ঞানের চুড়ান্ত ধাপ । জ্যোতির্বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের বলা হয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ।
আর জ্যোতিষশাস্ত্রবিশারদকে বলে জ্যোতিষী । তারা গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্হান দেখে মানুষের ভাগ্য সম্পর্কে ধারণা দেন । জ্যোতিষশাস্ত্র বিজ্ঞান নয় এবং এই বিষয় ধর্মবিরোধী ।
আমি আমার দুরবীন দিয়ে প্রায়ই আকাশ দেখি ।
আকাশে খালি চোখে আমরা কি পরিমান তারা দেখি ? :
আকাশে জ্বল জ্বল করা বস্তুগুলোকে আমরা তারা বলে থাকি । সন্ধ্যায় আকাশে ফুটে উঠতে থাকে অসংখ্য তারা । ধীরে ধীরে তারাগুলো আরও বেশি স্পষ্ট হতে থাকে । খালি চোখে বড়জোড় পাঁচ হাজার তারা দেখা যায় । জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দুরবীন দিয়ে দেখেন লক্ষ লক্ষ তারা । যারা তারাভরা আকাশের আলোকচিত্র নিয়ে কাজ করেন তারা বলেন তারার সংখ্যা কোটি কোটি ।
আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য তারা চিত্র যাতে এন্ডোমিডা গ্যালাক্সির অবস্হান দেখানো হয়েছে ।
নক্ষত্র আসলে কি ?
তারা আছে অনেক রকমের । কোনটির আলো আছে । কোনটির নেই । যাদের আলো আছে তাদের আমরা নক্ষত্র বলি । আমাদের সূর্য হলো নক্ষত্র । তার আলো আছে । তার আলোর হতে আমরা আলো পাই ।
গ্যালাক্সী কি ?
বিজ্ঞানীরা বলেন এক লিখে বারটা শূণ্য লিখলে যে সংখ্যা হয় তার সমপরিমান নক্ষত্র নিয়ে একটা গ্যালাক্সি হয় । নক্ষত্র হচ্ছে এমন তারা যার নিজের আলো আছে , যেমন : আমাদের সূর্য ।
গ্রহ :
এসব নক্ষত্রগুলোকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু তারা ঘুরে, তাদের বলা হয় গ্রহ । আমাদের পৃথিবী সূর্যেরই একটি গ্রহ । কারণ পৃথিবী সূর্যের চার দিকে ঘুরে । আমরা যে গ্যালাক্সিতে বাস করি তার নাম মিল্কিওয়ে । কারণ সূর্য মিল্কিওয়ের অংশ ।
মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে আমাদের সূর্যের অবস্হান
মিল্কিওয়ে নাম করণের কারণ :
খালি চোখে গ্রামের আকাশ হতে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি
This name derives from its appearance as a dim “milky” glowing band arching across the night sky, in which the naked eye cannot distinguish individual stars. The term “Milky Way” is a translation of the Classical Latin via lactea, from the Hellenistic Greek γαλαξίας κύκλος (pr. galaxías kýklos, “milky circle”)
The Milky Way is a barred spiral galaxy 100,000–120,000 light-years in diameter containing 200–400 billion stars.
মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি যা গ্রীক দেবী হেরা-র বুকের দুধ হতে সৃষ্টি হয়েছে । তার শিশু ছেলে দেবতা হারকিউলিস-কে দুধ খাওয়ানোর সময় তার দুধ আকাশে পড়ে যেয়ে এই গ্যালাক্সি সৃষ্টি হয়েছে । প্রাচীন গ্রীক পুরাণে এই কথাই লেখা আছে ।
One account[33] of the origin of the Milky Way is that Zeus had tricked Hera into nursing the infant Heracles: discovering who he was, she pulled him from her breast, and a spurt of her milk formed the smear across the sky that can be seen to this day. Unlike any Greeks, the Etruscans instead pictured a full-grown bearded Heracles at Hera’s breast: this may refer to his adoption by her when he became an Immortal. He had previously wounded her severely in the breast.
আমাদের মিল্কিওয়ের প্রতিবেশী গ্যালাক্সির নাম এন্ড্রমিডা । এটিতে মিল্কিওয়ের থেকে বেশী তারা থাকে ।
এন্ড্রমিডা গ্যালাক্সির ছবি
আমি আমার দুরবীন দিয়ে খুব ভালভাবেই এন্ড্রমিডা গ্যালাক্সিকে দেখে থাকি । আমার এই দুরবীন দিয়ে সবচেয়ে বেশী ভাল দেখা যায় আমাদের চাঁদ মামাকে । চাঁদ মামা হলেন উপগ্রহ । কারণ গ্রহের চার দিকে যেসব তারা ঘুরে তাদের উপগ্রহ বলা হয় । চাঁদ পৃথিবীর চার দিকে ঘুরে ।
জোছনা রাতে চাদের ছবি
আল্লাহ চাদ সূর্য ও মহাকাশের বস্তুর ঘুরা সম্পর্কে সুরা ইয়াসীনে বলেছেন :
“The sun must not catch up the moon, nor does the night outstrip the day. Each one is travelling in an orbit with its own motion.” The Quran –sura 36, verse 40
চাদ হতে পৃথিবীর ছবি
চাঁদ মামাকে ইদানিং আমার ভাগ্নে- ভাগ্নি আর ভাইপো আমার এই দুরবীন দিয়ে দেখে । তাদের বয়স খুবই কম । তারা কোথায় যেনো শুনেছে মানুষ মরে গেলে নাকি মানুষ আকাশের তারা হয়ে যায় আর মৃত মানুষরা নাকি পৃথিবীর লোকদের এভাবেই নাকি দেখে । আর কাজের বুয়ার কাছে শুনেছে,পৃথিবী একটা মহিষের শিংয়ের উপর আছে । পৃথিবী ঘুরতে ঘুরতে যখন এক শিং থেকে আরেক শিংয়ে যায়, তখন ভূমিকম্প হয় । আমার এক ভাই ভূতত্ববিদ । সে খুব সুন্দর ভাবে এসব বিষয় বুঝিয়ে বলে বুয়ার কথা ভুল । তারপরও তারা বলে মামা তোমার কথা ঠিক না । রুপকথার বইয়ের কথাগুলো আর বুয়ার কথাগুলো ঠিক । আমি মনে করি, তারা যখন বড় হবে, তখন তারা নিজেরাই তাদের অনুসন্ধিৎসু মন দিয়ে সব বিচার করবে । আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা বিজ্ঞানমনস্ক ও অনিসন্ধিসু মন নিয়ে বেড়ে উঠুক । কারণ আল্লাহ বলেছেন :
“Do they not look at the sky above them, how We have built it and adorned it, and there are no rifts in it.”
The Quran –sura 50, verse 6.
আমার তোলা চাদের কিছু অংশের ছবি
প্রয়োজনীয় কিছু ভিডিও-র লিংক :
মিল্কিওয়ের উপর ভিডিও যা দেখে আপনারা মিল্কিওয়ে সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন :
আশা করি আপনাদের আমার বিজ্ঞান বিষয়ক এই নতুন ধারাবাহিক পোস্ট ভাল লাগবে । আমি মনে করি আমার এসব লেখা পড়ে আপনারা মহাবিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে বর্তমান সময়ের সব তথ্য জানতে পারবেনই, বরং কীভাবে মানুষ আকাশকে জয় করেছে এবং আকাশের বিভিন্ন গ্রহে বসবাস করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সে সম্পর্কে জানতে পারবেন ।
(প্রিয়.কম) এই ব্যস্ত নাগরিক জীবনের ফাঁকেও নিজের ঘরের কোণে এক টুকরো বাগানের শখ অনেকেরই আছে। আর সেই শখ মেটাতেই যেন বারান্দা কিংবা ছাদ জুড়ে রাখা ফুলের গাছ। অনেকে আবার শখ করে ফলের গাছও লাগিয়ে থাকেন। কিন্তু পুকুর? কখনো কি শুনেছেন যে ঘরের বারান্দা কিংবা ছাদে শোভা পাচ্ছে পুকুর? তাও আবার শাপলা ফোটা পুকুর?
হ্যাঁ, এই অসাধ্যটি সাধন করেছেন একজন ভীষণ শৌখিন মানুষ শিমুল কলি হোসাইন। নিজের ছাদেই দারুণ একটি শাপলা পুকুর তৈরি করেছেন তিনি, যা কিনা মৌসুমের সময় ছেয়ে থাকে ফুলে ফুলে। কিন্তু কীভাবে করলেন এই কাজ? কীভাবে পুকুরের শাপলাকে তুলে আনলেন বাড়ির ছাদে?
শিমুল আপার ভাষ্যমতে কাজটি কঠিন ছিল না মোটেই। বরং খুব সহজেই নাকি গড়ে উঠেছে এই শাপলা পুকুর।
আসুন, জেনে নেই তাঁর মুখ থেকেই। শিমুল আপা জানালেন-
“২ টা শাপলা লাগিয়েছিলাম বেশ অনেক বছর হল। প্রায় ১০/১২ বছর তো হবেই। শীতে একদম শুকিয়ে যায়, মনে হয় মরে গেছে, কিন্তু মাটিতে বাল্বটা থেকে যায়। আমি শুধু তখন সামান্য পানি দিয়ে রাখি যেন বাল্বটা না মরে। আর বর্ষাতে তো ফুল ফোটে।”
কীভাবে আপনার ঘরে ফুটবে শাপলা?
-গরু পানি খায় এমন একটা মাটির চারি নিন। চারিটি যেহেতু নিচে গোলাকার, তাই একে গাড়ির পুরনো টায়ারের উপর বসিয়ে দিন। এবার আর নড়বে চরবে না।
-পানিতে ছেড়ে দিতে পারেন ছোট মাছ, দেখতে সুন্দর লাগবে।
-পানি কমে গেলে মাঝে মাঝে পানি দিয়ে দেবেন।
ব্যস, এর বেশী আর কিছুই করতে হবে না। এবার দেখুন ছবিগুলো। প্রতিটি ছবি শিমুল কলি হোসাইনের ছাদের ছোট্ট পুকুরের। কি, অপূর্ব সুন্দর না? এই সৌন্দর্য এখন থাকবে আপনার ঘরেও।
আমার বাড়ির ছাদে শাপলা ফুলের জন্য বড় হাফ ড্রাম তেরী করে রেখেছিলাম । এখন সেটাতে শাপলা নেই । তবে শেয়ার করার ইচ্ছা আছে । আগের ছবি পেলে শেয়ার করবো ।
আমার বাড়ির ছাদে লাগানো লাল শাপলা ফুলের ভিডিও শেয়ার করছি ।
আমিএকটা প্লাস্টিকের বাউলে ২৮ এপ্রিল ২০১৩ লাল শাপলা ফুলের কন্দ লাগিয়েছি । এই বাউলটা ১৮ ইঞ্চি ব্যাসের এবং ৮ ইঞ্চি উচ্চতা বিশিষ্ট্য । কন্দটা যোগার করেছি আশুলিয়ার এক বাড়ি ডোবা থেকে । মালিক তিনটা কন্দ দিল । বল্লেন, আরো নিতে চাইলে পরে আসেন ।
প্রথমে দুই ইঞ্চি মাটি বাউলের ভিতর দেই । তারপর শাপলা ফুলের কন্দটা লাগাই । মাটি যাতে সরে না যায় বা কন্দটা নাড়াচারা না করতে পারে – এজন্য সিরামিকের টাইলসের ভাঙ্গা টুকরা ও ইট ব্যবহার করি । মাত্র ২৫ দিনে আমার এই লাল শাপলা ফুল গাছটা কেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তা এই ভিডিও দেখলেই বুঝতে পারবেন ।
লাল শাপলা বা রক্ত কমল (বৈজ্ঞানিক নাম: Nymphaea rubra) শাপলা পরিবারের একটি জলজ উদ্ভিদ। এটি বাংলার প্রজাতি। পাতা এবং বোঁটা লালচে সবুজ। ফুল ডাবল, ১০-২০ সেমি চওড়া, অনেকগুলি পাপড়ি এবং পাপড়ির রঙ লাল। রাতে ফোটে।
গোলাকার ফলে অনেকগুলো ছোট ছোট বীজ হয়। বীজ খাওয়া যায়। গোঁড়ার কন্দ থেকে চাষ করা হয়। কন্দ হলো কচুর মতো দেখতে এক ধরনের কান্ড । একে অনেকে শালুকও বলে । শালুক খাওয়া যায় ।
বিদেশী জাতের শাপলাগুলো ছোট চারি ( গরুকে ভাতের মার ও পানি খাওয়ানোর মাটির তেরী বড় পেয়ালা )-তে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকে । শাপলা ফুলসহ এগুলো সাইজ ও রঙ অনুসারে ২,৫০০-৬,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ঢাকার আগারগাও-এর নার্সারীগুলোতে আছে । দামাদামি করে কিনতে পারেন ।
শাপলা ফুল ছাদে লাগানোর কোন টিপস প্রয়োজন নেই । শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল যা খুব সহজেই হয়। শুধু সামান্য মাটি ও পানিতে রাখতে হবে, পাশাপাশি যেন রোদও পায়।
আমাদের এলাকায় একটা কথা চালু আছে যার বাড়িতে শাপলা ফুল চাষ করা হয় এবং মৌমাছির বাসা থাকে, তাদের ভাগ্য ভাল হয় এবং বিপদ আপদ কেটে যায় ।
বাস্তবে খুব কম লোকই শাপলা ফুল চাষ করে । কিন্তু আমি নিজে শাপলা ফুল চাষ করেছি । এই বিষয়ে আমার মজার অভিজ্ঞতা এই লেখায় শেয়ার করেছি ।
বাংলাদেশের জাতীয় ফুল হলো সাদা শাপলা ফুল । এর বৈজ্ঞানিক নাম Nymphaea nouchali । আমি আমার লেখায় এই ফুল সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি । শহরের অনেক ছেলে-মেয়ে এই ফুল কখনো ছুঁয়ে দেখেনি । তাদের জন্য আমার এই লেখাটা উপকারী হতে পারে ।
আজ আমার ভাই ও বোনের ছোট্ট ছেলে-মেয়েরা বাড়ির বাহিরে বেড়াতে যাওয়ার জন্য আবদার করলো । আমি সকালেই আমাদের বাড়ির কাছে সদ্য চালু হওয়া বিরুলিয়া ব্রীজের কাছে নিয়ে গেলাম । বিরুলিয়া ঢাকার বোটানিক্যাল গার্ডেনের হতে মাত্র তিন কিলোমিটার দুরবর্তী স্হান । এখানে প্রাচীণ কালের অনেক নিদর্শণ আছে দিগন্ত বিস্তৃত গোলাপ ফুল ও গ্লাডিউলাস ফুল – সহ বিভিন্ন ফুলের বাগান আছে । আর ধানক্ষেত আর বিভিন্ন সব্জি বাগানের কথা বাদই দিলাম ।
আমি উদ্ভোদনের অপেক্ষায় থাকা বিরুলিয়া ব্রীজের কাছে গরান চটবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশের খালে লাল শাপলা দেখলাম । সাদা শাপলা এখন এখানে খুব একটা পাওয়া যায় না । তারপরও লোকদের কাছে সাদা শাপলা ফুলের অবস্হান জানতে চাইলাম । কারণ আমি কথা দিয়েছিলাম আমার ভাই-বোনের ছেলে-মেয়েদের বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা দেখাবো । তারা মনিপুর স্কুলে ক্লাস ওয়ান ও ক্লাস ফাইভে পড়ে । তারা এই ফুল না দেখেই ড্রইং পরীক্ষায় এঁকেছিলো । আজ তারা সরাসরি সাদা শাপলা ফুল দেখতে চায় । আমি পড়লাম সমস্যায় । কারণ সবাই লাল শাপলা জোগাড় করে দেওয়ার কথা বল্লো । কিন্তু তারপরও আমার ভাল লাগছে । আমি আমার অতীতের স্মৃতি চারণ করতে লাগলাম । আর যাওয়ার সময় লাল শাপলার কয়েকটা কন্দ-সহ গাছ নিলাম আমাদের দালানের রুফ গার্ডেনে বড় চাড়ি বা হাফ ড্রামে লাল শাপলার কন্দগুলো লাগানোর জন্য । এর ফলে আমাদের বাড়ির ছাদে ছোট খাট একটা শাপলা পুকুর তেরী হবে । আর কয়েক মাস পর গ্রাম হতে সাদা শাপলা ফুলের কন্দ আনবো । আর তাদের দিয়েও ছোট খাট একটা শাপলা পুকুর বানাবো ।
ছোট বেলায় আমরা গ্রামে যেতাম । এই ধরুন সময়টা ১৯৮৫ হতে ৯৫ হবে । বর্ষায় দেখেছি শাপলা ফুলে ফুলে সাদা হয়ে আছে ধানের ক্ষেতগুলো । শরতের সকালে দেখতাম মামা-রা সেখানে মাছ ধরতো ডিংগি নৌকায় করে । যতদুর চোখ যায় শুধু সাদা শাপলা । শাপলা ফুলের কি সুন্দর ঘ্রাণ ! হালকা কুয়াশা । মৌমাছি শাপলা ফুলে ফুলে ঘুরছে । তখন এসব দৃশ্য দেখে কোন অনুভতি হতো না । এখন ওই সব স্মৃতি মন্থন করে আফসোস করি । নৌকা চলছে । আমি আর আমার বোন – দুই জনই হাত দিয়ে টেনে ধরছি শাপলা । একটার পর একটা উঠে আসতো । ছোট মামা নিষেধ করতেন । মামা মাছ ধরা শেষে তুলে নিতেন কিছু ঢ্যাঁপ ।
ঢ্যাপ হলো শাপলার ফল । বাড়ি এনে ওগুলো দিয়েছি খালাকে । ঢ্যাঁপ থেকে মুড়ি বানানোর দায়িত্ব ছিল তার। তবে বানানোর কারিগরী বিষয়গুলো আমার আজো মনে আছে। ঢ্যাঁপ এর ভেতর থাকে ছোট ছোট কালো রংয়ের বীজ । ঢ্যাঁপ কচি থাকলে বীজ গুলোর রং থাকে লাল । ওগুলো বের করে ছাই দিয়ে ঘষে বীজের গায়ের পিচ্ছিল আস্তরন ছাড়ানো হত। এরপর ও গুলো শুকানো হত রোদে। ঠিকমত শুকিয়ে গেলে চাল থেকে যেভাবে মুড়ি বানানো হয় ঠিক সেভাবেই ওই বীজগুলো দিয়ে বানানো হত ঢ্যাঁপের মুড়ি। মুড়ির সাথে খেঁজুরের গুড় মেখে বানানো হতো মোয়া, ঢ্যাঁপের মোয়া ! আহ্ আর কি পাব ওই সব ! যদিও আম্মা প্রতি বর্ষায় গ্রাম হতে ঢ্যাঁপ ও শালুক আনানোর ব্যবস্হা করেন ।
Water lily : Nymphaeaceae শাপলা ফুলের উপর সুন্দর গান
বাংলাদেশের জাতীয় ফুল সাদা শাপলা এবং এর বিভিন্ন জাত :
শাপলা Nymphaeaceae পরিবারের এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ । এ পরিবারভূক্ত সকল উদ্ভিদই শাপলা নামে পরিচিত। বিশ্বে শাপলার প্রায় ৮০ টি প্রজাতি আছে । এদের সাধারণ নাম শালুক, শাপলা, শুঁধি।
শাপলা ফুল অনেক রঙের হয় । আবার অনেক জাতের হয় । যেমন : সাদা শাপলা ফুলের অনেকগুলো জাত আছে । বাংলাদেশের জাতীয় ফুল হিসেবে সাদা শাপলা ফুলের “ Nymphaea nouchali “ -প্রজাতিকে বেছে নেওয়া হয়েছে । কারণ এই প্রজাতির শাপলা ফুল বাংলাদেশের খাল-বিল-হাওর-বাওর-পুকুর-নদী-নালাতে বেশি দেখা যায় ।
সাদা শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল হলেও এটি ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ইয়েমেন, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার প্রভৃতি দেশের পুকুর ও হ্রদে দেখা যায়। তবে শ্রীলংকার জাতীয় ফুল হলো নীল শাপলার ……. প্রজাতি ।
বাংলাদেশের জাতীয় ফুল Nymphaea nouchali প্রজাতির সাদা শাপলার বৈশিষ্ট্য :
সাদা শাপলা একসময় বাংলাদেশের হাওর, বিল বা উন্মুক্ত জলাশয়ে অত্যন্ত সুলভ ছিল। বর্তমানে জলাশয়ের পরিমাণ কমে যাওয়ায় এই উদ্ভিদ দুর্লভ হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ ছাড়াও এই ফুল থাইল্যান্ড ও মায়ানমারে পুকুর ও বাগান সাজাতে চাষ করা হয়।
শাপলার অন্যান্য প্রজাতিগুলোর বৈশিষ্ট্য প্রায় একই রকম। তবে রঙের হেরফের কারণে এদের ভিন্ন ভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। নিচে এরূপ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রজাতির সাধারণ পরিচয় তুলে ধরা হলো :
১. এই জাতের সাদা শাপলার মাঝখানের গর্ভকেশর গুলো হলুদ রঙের হয়।
২. এই ফুলে ৪ থেকে ৫ টি বৃতি ও ১৩ থেকে ১৫ টি পাপড়ি থাকে।
৩.ফুলগুলো দেখতে তারার মত মনে হয়।
৪.সবুজাভ বৃতিগুলো ১১ থেকে ১৪ সেমি লম্বা হয়ে থাকে।
৫.স্বাদু পানিতে জন্মানো এই ফুলের হালকা গোলাপি রং এর বৃন্ত অনেক লম্বা। এই বৃন্ত সবজী হিসেবেও খাওয়া হয়। ৬.পূর্ণবিকশিত শাপলা ফুলের গর্ভাশয়ে গুড়ি গুড়ি বীজ থাকে। এই বীজ ভেজে একধরনের খৈ বানানো হয় যার নাম “ঢ্যাপের খৈ”।
শাপলা ফুল দিনের বেলা ফোটে। এই ফুল সরাসরি কাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকে। ফুলের কাণ্ড বা ডাঁটা পানির নিচে মূলের সাথে যুক্ত থাকে এবং এই মূল জলাশয়ের তলদেশের ভূমিতে যুক্ত থাকে। এর পাতাগুলো পানির উপর ভেসে থাকে। পাতার আকার প্রায় গোল, তবে এর একটি পার্শ্ব বিভক্ত থাকে। পাতার রঙ সবুজ, পাতার প্রান্ত ঘিরে ধারালো খাঁচ থাকে। পাতার ব্যাস প্রায় ১৫-২০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। এর ফুলগুলো অফুটন্ত অবস্থায় গম্বুজের মতো দেখায়। এর বাইরের দিকের রঙ সবুজাভ ধূসর। ফুটন্ত অবস্থায় এর ভিতরের সাদা পাপড়িগুলো ছড়িয়ে পড়ে। পাপড়িগুলো ৭-১০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। এই উদ্ভিদের ফুল প্রায় সারা বছরই দেখা যায়। তবে বর্ষা ও শরৎ এই ফুল ব্যাপকভাবে দেখা যায়। এর ফল প্রায় গোলাকার অর্থাৎ ঈষৎ লম্বাটে।
শাপলার ব্যবহার :
একসময় বাংলাদেশের খাল-বিলে একসময় অসংখ্য শাপলা দেখা যেতো, তবে আজকাল আর সেভাবে চোখে পড়ে না। অপরিকল্পিতভাবে জলাশয় ভরাট, গরু ও মহিষের খাদ্যের যোগান দিতে শাপলা দিন দিন কমতে শুরু করেছে।
১. প্রাকৃতিক সৌন্দর্য :
অনুপম সৌন্দর্যের এই ফুলটি আপনা আপনি ডোবা, খাল, গভীর পুকুর ও জলাশয়ে আপন মনে ফুটতে দেখা যায়। প্রস্ফুটিত শাপলা দেখতে অনেকটা আলোকরশ্মি বিচ্ছুরিত নক্ষত্রের মতো। শাপলা ফোটে রাতের স্নিগ্ধতায় আর দিনের আলোতে আস্তে আস্তে বুজে যায়। একটির শাপলার স্থায়িত্ব এক নাগাড়ে সাতদিন পর্যন্ত।
২. শাপলার ফল বা ডেপ ও খই খাবার হিসেবে ব্যবহার :
শাপলার ফলগুলো হয় সবুজ গোলাকার আর পাকলে ফেটে যায়। ফলের মধ্যে অনেকগুলো কোষ থাকে। কোষগুলোর মধ্যে থাকে কালে ও বাদামী রঙের অসংখ্য বীজ। বীজগুলো আকারে খুবই ছোট। এই বীজ রোদে শুকিয়ে গরম বালু দিয়ে আগুনে ভেজে খই তৈরি করা যায়। গ্রাম অঞ্চলে শাপলা ফলের খই অনেক জনপ্রিয়।
৩. শাপলা তরকারী হিসেবে ব্যবহার :
তাছাড়াও শাপলার ডাটা তরকারি হিসেবেও সমাদৃত। গ্রাম বাংলার দুরন্ত কিশোর-কিশোরীরা হাঁটু, কোমর, বুক ও গলা সমান পানিতে নেমে সাঁতার কেটে এগুলো তুলে আনে। সবাই মনের আনন্দে ভাগাভাগি করে খায় এবং কিছু বাড়ি নিয়ে তরকারি হিসেবে রান্নার যোগান দেয়। ইলিশ ও চিংড়ি মাছের সাথে রান্না করলে অতুলনীয় স্বাদ পাওয়া যায়।
৪. শাপলা খেলনার উপকরণ :
আবার গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা শাপলা ফুল দিয়ে খোঁপা ও গলার মালা, হাতের চুড়ি ইত্যাদি নানা রকম সাজগোজের উপকরণ হিসেবে খেলাধুলা করে।
৫. ঔষধ হিসেবে শাপলার ব্যবহার :
শাপলা শুধুই যে সৌন্দর্যের প্রতীক তা কিন্তু নয়, এর ওষুধি গুণসম্পন্ন উপকারিতাও রয়েছে। বীজ খই ছাড়াও ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। রক্ত দোষ ও বহুমূত্র রোগে শাপলা উপকারী।
সাধারণত ফুল ও রাইজোম মানবদেহের বিভিন্ন রোগে যেমন- স্নিগ্ধ কারক, শীতল কারক, পিত্ত প্রশমক, হৃদযন্ত্রের শক্তি কারক ও পিপাসা নিবারক। তাছাড়া প্রসাবের জ্বালা পোড়া, আমাশয় ও পেট ফাঁপায় উপকারী। রোগ অনুসারে নিচের পদ্ধতি অবলম্বনে অনেক উপকারে আসবে যেমন-
প্রসাবের জ্বালা পোড়া ও পিত্তাধিক্য রোগে শাপলা ফুলের শুকনো অংশ ১০-১৫ গ্রাম পাঁচ গ্রাম ধনিয়া আধা চূর্ণ করে, দুই কাপ পানিতে মিশিয়ে জ্বাল করে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মত চিনি সহ দিনে ২ বার ১৫-২০ দিন খেলে উপকার হবে।
হৃদযন্ত্রের দুর্বলতায় ও হৃদকম্পে রোগের জন্য শাপলা ফুল ১০ গ্রাম, সাথে পাঁচ গ্রাম গোলাপ ফুল মিশিয়ে দুই কাপ পানিতে জ্বাল করে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মত চিনি মিশিয়ে প্রতিদিন ২ বার এভাবে ১ মাস নিয়মিত খেলে বিশেষ উপকারে আসবে।
পিপাসা নিবারনের জন্য শাপলা ফুলের শুকনো অংশ ১০-১২ গ্রাম এক কাপ পানিতে জ্বাল করে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মত চিনি মিশিয়ে দিনে ২ বার এভাবে ১ মাস খেলে উপকার হবে।
বাড়ির ছাদে কিংবা বারান্দায় ছোট্ট শাপলা পুকুর করার পদ্ধতি :
শাপলা জলজ উদ্ভিদ। শাপলা প্রাকৃতিক পরিবেশ ও চাষাবাদ – উভয়ভাবেই উৎপাদিত হয়। অম্লক্ষারবিহীন জলেই এটি ভাল জন্মে। তবে ১৫° সেলসিয়াল তাপমাত্রার নীচে এটি জন্মে না। জলজ উদ্ভিদ হিসেবে এটির শিকড়পানিতে কাদার নীচে প্রবেশ করে। শাপলা ফুল সরাসরি কাণ্ড ও মূলের সাথে যুক্ত থাকে। মূল যুক্ত থাকে মাটির সঙ্গে এবং পাতা পানির উপর ভেসে থাকে। কিছু পাতা পানির নীচে থাকে। মূল থেকেই নতুন পাতার জন্ম নেয়। পাতাগুলো গোল এবং সবুজ রঙের হয় কিন্তু নীচের দিকে কালচে রঙের হয়ে থাকে। ভাসমান পাতাগুলোর চারদিক ধারালো হয়। কাগজের ন্যায় হালকা পাতাগুলোর আকার ১৫ থেকে ২৬ সেন্টিমিটার এবং এদের ব্যাপ্তি প্রায় ০.৯ থেকে ১.৮ মি। ফুলগুলো যখন পূর্ণাঙ্গভাবে বিকশিত হয়, তখন এর ব্যাস প্রায় ১৫ সে.মি হয়। শাপলা ফুল দিনের বেলায় সঙ্কুচিত হয় এবং রাতে পূর্ণাঙ্গভাবে ফুঁটে।
কখনো কি শুনেছেন যে ঘরের বারান্দা কিংবা ছাদে শোভা পাচ্ছে পুকুর? তাও আবার শাপলা ফোটা পুকুর?
নিজের ছাদেই দারুণ শাপলা পুকুর তৈরি করেছেন ঢাকা শহরে অনেকেই । যা কিনা মৌসুমের সময় ছেয়ে থাকে ফুলে ফুলে। কিন্তু তারা কীভাবে করলেন এই কাজ ? কীভাবে পুকুরের শাপলাকে তুলে আনলেন বাড়ির ছাদে ? খুব সহজেই নাকি গড়ে উঠেছে এই শাপলা পুকুর।
আমি নিজে তিনটা শাপলা লাগিয়েছিলাম কয়েক বছর আগে শীতে একদম শুকিয়ে যায়, মনে হয় মরে গেছে, কিন্তু মাটিতে কন্দটা থেকে যায়। আমি শুধু তখন সামান্য পানি দিয়ে রাখি যেন কন্দটা না মরে। আর বর্ষাতে তো ফুল ফোটে।
কীভাবে আপনার বাড়ির ছাদে ফুটবে শাপলা ? :
গরু পানি খায় এমন একটা মাটির চারি নিন। চারিটি যেহেতু নিচে গোলাকার, তাই একে গাড়ির পুরনো টায়ারের উপর বসিয়ে দিন। এবার আর নড়বে চরবে না।
আমার বাড়ির ছাদে শাপলা ফুলের জন্য বড় হাফ ড্রাম তেরী করে রেখেছিলাম । এখন সেটাতে শাপলা নেই । তবে শেয়ার করার ইচ্ছা আছে । আগের ছবি পেলে শেয়ার করবো ।
আমার বাড়ির ছাদে লাগানো লাল শাপলা ফুলের ভিডিও শেয়ার করছি ।
আমিএকটা প্লাস্টিকের বাউলে ২৮ এপ্রিল ২০১৩ লাল শাপলা ফুলের কন্দ লাগিয়েছি । এই বাউলটা ১৮ ইঞ্চি ব্যাসের এবং ৮ ইঞ্চি উচ্চতা বিশিষ্ট্য । কন্দটা যোগার করেছি আশুলিয়ার এক বাড়ি ডোবা থেকে । মালিক তিনটা কন্দ দিল । বল্লেন, আরো নিতে চাইলে পরে আসেন ।
প্রথমে দুই ইঞ্চি মাটি বাউলের ভিতর দেই । তারপর শাপলা ফুলের কন্দটা লাগাই । মাটি যাতে সরে না যায় বা কন্দটা নাড়াচারা না করতে পারে – এজন্য সিরামিকের টাইলসের ভাঙ্গা টুকরা ও ইট ব্যবহার করি । মাত্র ২৫ দিনে আমার এই লাল শাপলা ফুল গাছটা কেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তা এই ভিডিও দেখলেই বুঝতে পারবেন ।
লাল শাপলা বা রক্ত কমল (বৈজ্ঞানিক নাম: Nymphaea rubra) শাপলা পরিবারের একটি জলজ উদ্ভিদ। এটি বাংলার প্রজাতি। পাতা এবং বোঁটা লালচে সবুজ। ফুল ডাবল, ১০-২০ সেমি চওড়া, অনেকগুলি পাপড়ি এবং পাপড়ির রঙ লাল। রাতে ফোটে।
গোলাকার ফলে অনেকগুলো ছোট ছোট বীজ হয়। বীজ খাওয়া যায়। গোঁড়ার কন্দ থেকে চাষ করা হয়। কন্দ হলো কচুর মতো দেখতে এক ধরনের কান্ড । একে অনেকে শালুকও বলে । শালুক খাওয়া যায় ।
বিদেশী জাতের শাপলাগুলো ছোট চারি ( গরুকে ভাতের মার ও পানি খাওয়ানোর মাটির তেরী বড় পেয়ালা )-তে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকে । শাপলা ফুলসহ এগুলো সাইজ ও রঙ অনুসারে ২,৫০০-৬,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ঢাকার আগারগাও-এর নার্সারীগুলোতে আছে । দামাদামি করে কিনতে পারেন ।
শাপলা ফুল ছাদে লাগানোর কোন টিপস প্রয়োজন নেই । শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল যা খুব সহজেই হয়। শুধু সামান্য মাটি ও পানিতে রাখতে হবে, পাশাপাশি যেন রোদও পায়।
ইউরোপ ও আমেরিকার মুসলিমদের এখন শুধু প্রয়োজন বেশী পড়াশোনা করা, যোগ্যতা অর্জন করা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জন করা । কারণ আগামী ৫০ বছরের মধ্যে ইউরোপের অনেক দেশে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি বা প্রভাবশালী অবস্হানে চলে যাবে । যেমন : ফ্রান্সে পঞ্চাশের দশকে মুসলিম জনসংখ্যা ছিল এক শতাংশের নিচে । আর এখন বিভিন্ন পরিসংখ্যানে ৮ হতে ১৫ শতাংশ দেখানো হয় ।
মুসলিমরা প্রভাবশালী হচ্ছে বলেই হিজাব, নিকাব আর মসজিদ নিয়ে অমুসলিমরা এত হৈ চৈ করছে । ইউরোপে অমুসলিমরা পরিকল্পিতভাবে মুসলিমদের অস্তিত্তবিনাসের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছিল সেই সপ্তম শতাব্দী হতেই । খ্রীষ্টানরাই তিন তিন বার বড় ধরনের ক্রসেড পরিচালনা করেছিল । মুসলিমদের এজন্য কৌশলী হতে হবে ।
আর মুসলিম প্রাধান্য দেশগুলোতে মুসলিমদের অবশ্যই ইসলামীকরণের মাধ্যমে তাদের দেশগুলোতে ইসলামী আদর্শের আলোকে গড়ে তোলতে হবে । মুসলিমদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে : তাদের উন্নায়ন ও অগ্রগতি ইসলামকে আকড়ে ধরার উপরই নিহিত । এর কারণ হিসেবে আমি অনেক কিছুই বলতে পারি । আমি শুধু আপনাদের বেশ কিছু উদৃতি পড়ার অনুরোদ করছি ।
সামুয়েল হান্টিংটনের এই উদৃতিটা ভাল করে পড়ুন :
“স্নায়ু যুদ্ধ পরর্বতী সংঘাত আদর্শগত বা অর্থনৈতিক কোনটি থেকেই বের হবে না । সভ্যতার সংঘাতই মূলত এখন প্রধান ভুমিকা পালন করবে ।”
এবার দেখুন ফরেন পলিশি ম্যাগাজিন সভ্যতার সংঘাতটা কি ব্যাখ্যা করতে যেয়ে বলেছে : স্নায়ু যুদ্ধ শেষ । পশ্চিমা কৌশলীরা পশ্চিমাদের নতুন শত্রু চিহ্নিত করছেন , তাহলো ইসলাম ।
নিচের এ উদৃতি দেখুন :
ইসলাম আর আধুনিক পশ্চিমা বিশ্ব আজ পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে একে অপরকে চ্যালেঞ্জ করছে। আর অন্য কোন ধর্মই পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি এমন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়ায়নি। খ্রীষ্টধর্মের চ্যালেঞ্জের প্রশ্নই আসে না। কারণ খ্রষ্টধর্মের পশ্চিমা বিশ্বের অংশ আর এই খ্রীষ্টধর্মকে আধুনিকতার মোহ-মায়া তিলে তিলে শেষ করে ফেলেছে। হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্ম ও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়ানোর প্রশ্ন আসে না। কারণ এগুলো কল্পিত দার্শনিক চিন্তা ও সংস্কার ছাড়া কিচু নয়। ইহুদী ধর্ম ও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়ানোর অবস্থায় নেই। কারণ এটি ক্ষুদ্র একটি গোত্রের দর্শ। পশ্চিমা বিশ্বে খলিফা ইমামুল মেহেদী, আয়াতুল্লাহ শব্দের যে প্রভাব অথবা মোল্লাদের পরিচালিত জিহাদ (ইসলাম বিনাশী সব শক্তির বিরুদ্ধে তৎপরতা) পশ্চিমী চিন্তাধারাকে যেভাবে আলোড়িত করে সে তুলনায় শুরু স্বামী লাম্বা রাব্বীর কোন গুরুত্বই বহন করে না।
( Toady Islam and the Modern World confront and challenge each ether. No other matter religion possesses such a challenge to the west. Not Christianity. Which sis a part of the western world and which has been eaten up from within by the acids of the modernity. Not Hinduism and Buddhism, because their rediation the west has been and is on high, eternal plane, and not Judaism, which is too small and tribal a faith. Not guru, no swami. no lama, no rabbi has had any impact on the west comparable to that exited by the caliph the Mahdi and the. Ayatollah or by that stereotype haunting the western imagination the mullah leaders the jihad. )
উৎস: The Economist , Godfreus gansen , International Islam ৩ জানুয়ারী ১৯৮১
এবার এ উদৃতিটা দেখুন:
“ভারতের অহিন্দু জনগণকে অবশ্যই হিন্দু সংস্কৃতি ও ভাষা গ্রহণ করতে হবে, অথবা সম্মান করা শিখতে হবে এবং বাস্তব জীবনে হিনউদ ধর্মকে সম্মান করতে হবে। ভারতের প্রতি অনুদারতা ও অকৃর্তিজ্ঞতামূলক ধারণা ত্যাগ করতে হবে। যাতে ভারতের গৌরবোজ্জ্বল হিন্দু জাতি ও সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ভালবাসা ও আত্মত্যাগের ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে হবে। অহিন্দুদের অবশ্যই বিদেশেী বা অস্থায়ীভাবে অবস্থানকারী হিসেবে বারতে বসবাস করতে হবে, পুরোপুরি হিনউদ জাতির অধীনে হয়ে থাকতে হবে। কোন বিশেষ সুবিধা, উপযুক্ত প্রতিবিধান অগ্রাধিকার, সদাচরণ প্রভৃতি দাবি করা তো দুরের কথা সামান্যতম নাগরিক সুযোগ সুবিধাও অহিন্দু জনগণ দাবী করতে পারবে না।”
(The non Hindu peoples in Hindustan must adopt Hindu culture and language, must either learn to respect and role in reverence Hindu religion, must entertain no ideas but those of glorification of the Hindu race and culture, (i.e.) they must not only give up their attitude of intolerance and ungratefulness forwards this land and its age long traditions but must also cultivate the positive attained of love and must cease to be foreigners or may stay in the country, whole sub ordinate to the Hindu Nation, claiming nothing, deserving no privileges, fearless any preferential treatment no even citizen’s right.” )
( উৎস: ভারতীয় জনতা পার্টির গুরু , এম. এস. গোলওয়ালকর -এর লেখা We as our Nationhood defined. 1th edition, Nagpur, India, Bharat Prekash 1947. page 55-50)
এই উদৃতি ভারতের মুসলিমদের জন্য সতর্ক সংকেতই নয়, সারা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য সতর্ক সংকেত । কারণ ২০৩০ সালে ভারতের মুসলিমরাই হবে বিশ্বের শীর্ষ স্হানীয় মুসলিম জনগোষ্ঠী আর বাংলাদেশের মুসলিমরা হবেন বিশ্বের ৪র্থ বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠী । বিশ্বের মুসলিমদের অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশের মুসলিমদের ভারত ও বার্মার মুসলিমদের কথা সবার আগে চিন্তা করতে হবে ।
বসনিয়ার স্বাধীনতার সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন : ইউরোপের বুকে কোন মুসলিম রাস্ট্র সহ্য করা হবে না । আমি মনে করি, এই উদৃতিটাকে ইউরোপের মুসলিমদের হৃদয়ে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে ।
মুসলিম দেশগুলো স্বাধীনতা পেয়েছে মাত্র কয়েক দশক হলো । ১৯৪৫ সালে মাত্র ৩টা স্বাধীন মুসলিম দেশ ছিল । জীবন ঘনিষ্ঠ শিক্ষা ব্যবস্হায় মুসলিমদের যেতে অনেক দিন লেগে যাবে । কারণ ধর্ম ব্যবসায়ী, নাস্তিক্যবাদ ও অমুসলিমদের অশুভ তৎপড়তা বাধাহীনভাবে চলছে । কোন কিছু রাতারাতি হয় না । একটা সন্তান জন্ম দিতে একটা মেয়ের ৯ মাস ১০ দিন ( ২৮০ দিন ) সময় লাগে । আর ১৭৫ কোটি মুসলিমের সমস্যার পাহাড় এক দিনে সমাধান করা সম্ভব নয় । এজন্য আমাদের মতো নগণ্য মুসলিমদের মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে ।